অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ কত টাকা লাগে ও প্রক্রিয়া
বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়ার খরচ কত?বর্তমানে অনেক বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়াতে কাজের সুযোগ খুঁজছেন, কারণ দেশটি ভালো মানের বেতনের পাশাপাশি স্থায়ী হওয়ার সুযোগও দিয়ে থাকে। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে – অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ কত টাকা লাগে এবং এর প্রক্রিয়া কেমন?
.webp)
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ধাপে ধাপে জানব ভিসার খরচ, আবেদনের পদ্ধতি এবং সংশ্লিষ্ট সব খরচ সম্পর্কে। তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোনায় প্রবেশ করা যাক।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ কত টাকা লাগে
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ কত টাকা লাগে? এই প্রশ্নটি বর্তমানে অনেক বাংলাদেশির। ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ করা হয়েছে, তবে খরচ আগের তুলনায় এখন কিছুটা বেড়েছে।
একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার জন্য আপনাকে যেসব খরচ মাথায় রাখতে হবে, সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
- ভিসা আবেদন ফি (Visa Application Fee): ৩৫০ – ৫৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ২৫,০০০ – ৪৫,০০০ বাংলাদেশি টাকা)
- IELTS পরীক্ষার ফিঃ IELTS পরীক্ষার জন্য একটি নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। যা প্রায় ২০,০০০ – ২৫,০০০ টাকা।
- মেডিকেল টেস্টঃ মেডিকেল টেস্টের জন্য খরচ আনুমানিক ৫,০০০ – ১০,০০০ টাকা
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্রঃ ১,০০০ – ৫,০০০ টাকা
- ডকুমেন্টস ট্রান্সলেশন ও নোটারি খরচঃ ২,০০০ – ৫,০০০ টাকা
- এজেন্সি সার্ভিস চার্জ (যদি প্রযোজ্য হয়): ২০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা
- এয়ার টিকিট (ওয়ান ওয়ে): ১,২০,০০০ – ২,০০,০০০ টাকা (সময় অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)
মোট আনুমানিক খরচ ২ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৩.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে যদি আপনি স্বতন্ত্রভাবে আবেদন করেন (এজেন্সি ছাড়া), তাহলে সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা কমে আসতে পারে। কারণ এখানে এজেন্সির ফি আপনাকে দিতে হচ্ছে না।
অস্ট্রেলিয়া যেতে কত টাকা লাগে
অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার মোট খরচ নির্ভর করে আপনার ভিসার ধরন, ডকুমেন্ট প্রসেসিং, এজেন্সি ফি, বিমানের টিকিট ইত্যাদির ওপর। তবে যদি আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যেতে চান, তাহলে সাধারণত খরচগুলো হবে
- ভিসা ফিঃ ৩৫০ – ৫০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ২৫,০০০ – ৩৭,০০০ টাকা)
- মেডিকেল টেস্টঃ ৫,০০০ – ১০,০০০ টাকা
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্সঃ ৫০০ – ১,০০০ টাকা
- ডকুমেন্ট ট্রান্সলেশন ও নোটারিঃ ৩,০০০ – ৮,০০০ টাকা
- বিমানের টিকিটঃ ১,২০,০০০ – ২,০০,০০০ টাকা (সিজন ভিত্তিতে কম বা বেশি হতে পারে)
উপরের উল্লিখিত সকল খরচ বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি এক্ষেত্রে ভিসার জন্য খরচ হবে প্রায় ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা। তবে সিজন ভিত্তিতে টাকার অংক কম বা বেশি হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অনেকটাই ভালো এবং সময় উপযোগি। যার জন্য সকলেরই আগ্রহ থাকে এই ভিসার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়া সরকার দক্ষ শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু করেছে। সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।
- Temporary Skill Shortage (TSS) Visa (Subclass 482): এই ভিসার মাধ্যমে নির্দিষ্ট পেশায় নিয়োগ পাওয়া যায়।
- Skilled Independent Visa (Subclass 189): এই ভিসা হলো পয়েন্ট ভিত্তিক স্থায়ী ভিসা, যেখানে কোনধরণের স্পনসরের প্রয়োজন নেই।
- Skilled Nominated Visa (Subclass 190): এই ভিসা রাজ্য সরকারের স্পনসরে পাওয়া যায়।
আপনি যদি উপরের উল্লিখিত ভিসাগুলো পেতে চান তাহলে এইসব ভিসার জন্য নির্দিষ্ট পেশা তালিকায় আপনার নাম থাকতে হবে। এছাড়াও ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই পাসপোর্ট, আপনি যেই কাজ পারেন সেই কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট, IELTS/TOEFL স্কোর ও অন্যান্য কাগজপত্রগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা হিসেবে অনেক ধরণের ভিসা রয়েছে। আর এই সকল কাজের ভিসার ধরণের ভিত্তিতে ভিসা ফি ও আলাদা হয়ে থাকে। নিম্নে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক ভিসা ফি উল্লেখ করা হলো।
- TSS Visa: এই ভিসার জন্য প্রাথমিক আবেদন ফি ৩১৫ – ৪৫০ AUD (যা প্রায় ২৫,০০০ – ৩৫,০০০ টাকা)
- Skilled Visa: এই ভিসার আবেদন ফি প্রায় ৪০০ – ৫৫০ AUD (যা প্রায় ৩২,০০০ – ৪৫,০০০ টাকা)
এগুলো শুধু ভিসার আবেদন ফি। এছাড়াও আরো বেশকিছু আলাদা ধরণের খরচ রয়েছে। যেমন মেডিকেল খরচ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর খরচ ও অন্যান্য খরচ।
অস্ট্রেলিয়া ভিসা খরচ
অস্ট্রেলিয়া কাজে যাওয়ার জন্য অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সকল ভিসাগুলো করার জন্য ভিসার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খরচ রয়েছে। আর এই অস্ট্রেলিয়া ভিসার খরচ মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। সেগুলি হলোঃ
- সরকারি ফিঃ যা আপনি অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে জমা দেন।
- প্রসেসিং ফিঃ যা আপনি যদি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করেন, তাদের সার্ভিস চার্জ হিসেবে দেন।
এখানে উল্লেখ করা ভালো, এজেন্সির খরচ সাধারণত ২০,০০০ – ৫০,০০০ টাকার মতো হয়ে থাকে।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ
আপনি কি শুধুমাত্র কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া যেতে চাচ্ছেন? তাহলে অবশ্যই আপনার অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার জন্য খরচ কত টাকা সেই সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আপনাদের মধ্যে যারা যারা শুধু কাজের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া যেতে চান, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
- ভিসা ফিঃ ২৫,০০০ – ৪৫,০০০ টাকা
- IELTS টেস্টঃ প্রায় ২০,০০০ – ২৫,০০০ টাকা
- মেডিকেল ও ক্লিয়ারেন্সঃ প্রায় ১০,০০০ – ১৫,০০০ টাকা
- প্রসেসিং ও এজেন্সি ফিঃ ৩০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা
আরো পড়ুনঃ কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত
উপরের উল্লিখিত সকল খরচগুলো বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি সব মিলিয়ে একজন আবেদনকারীর মোট খরচ ১.৫ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে পারে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ভিসার দাম কত
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের ভিসা রয়েছে। আর এই ভিসার ধরণের ভিত্তিতে ভিসার দামের মধ্যেও তারতম্য হয়ে থাকে। প্রতিটি ভিসার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফি নির্ধারণ করা রয়েছে। ২০২৫ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার স্কিলড ওয়ার্কারদের জন্য ভিসার দামগুলো নিম্নরূপঃ
উপরের উল্লিখিত এই ফিগুলো পরিবর্তিত হয়ে থাকে। তাই ভিসা আবেদন করার পূর্বে তাদের অফিসিয়াল সাইট immi.homeaffairs.gov.au তে গিয়ে সর্বশেষ তথ্য দেখে আবেদন করা উচিত।
Frequently Asked Questions (FAQ)
প্রশ্ন- ১ঃ অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ সালে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ প্রায় ২ লক্ষ থেকে ৩.৫ লক্ষ টাকার মধ্যে, সব খরচ মিলিয়ে।
প্রশ্ন- ২. অস্ট্রেলিয়ার কোন কোন কাজের ভিসা জনপ্রিয়?
উত্তরঃ TSS (Subclass 482), Skilled Independent (Subclass 189) এবং Skilled Nominated (Subclass 190) সবচেয়ে জনপ্রিয়।
প্রশ্ন- ৩. বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা ফি কত?
উত্তরঃ ভিসা ফি সাধারণত ৩৫০–৫৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৫,০০০–৪৫,০০০ টাকা।
প্রশ্ন- ৪. অস্ট্রেলিয়া যেতে মেডিকেল পরীক্ষা লাগবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, এটি বাধ্যতামূলক এবং অনুমানিক খরচ ৫,০০০–১০,০০০ টাকা।
প্রশ্ন- ৫. IELTS কি অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার জন্য আবশ্যক?
উত্তরঃ হ্যাঁ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে IELTS বা সমমানের ইংরেজি দক্ষতার সনদ প্রয়োজন।
প্রশ্ন- ৬. ভিসা আবেদন কি নিজে করা যায় না কি এজেন্সির দরকার?
উত্তরঃ নিজে আবেদন করা যায়, তবে জটিলতা এড়াতে অভিজ্ঞ এজেন্সির সাহায্য নেয়া ভালো।
প্রশ্ন- ৭. কত দিনের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ সাধারণত ২ থেকে ৪ মাস সময় লাগে, ভিসার ধরন ও আবেদন প্রক্রিয়া অনুযায়ী।
উপসংহার
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ কত টাকা লাগে ও প্রক্রিয়া – এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেওয়া কঠিন। তবে, আশা করছি উপরের বিশ্লেষণ থেকে আপনি একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়ে গেছেন।
আপনি যদি অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী হন, তবে খরচ ও প্রক্রিয়া আগে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সঠিক কাগজপত্র, ভাষা দক্ষতা এবং নির্ভরযোগ্য এজেন্সি নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আপনার ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণে বৃদ্ধি পায়।
✅কমেন্ট করুন আপনার অভিজ্ঞতা জানাতে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url